নিউমেরিক ও কালার কোড ব্যবহার করে রেজিস্টর এবং ক্যাপাসিটরের মার নির্ণেয়ের পদ্ধতি ( The procedure of determining the value of resistors capacitor using numeric and colour code):
রেজিস্টরের মান নির্ণয়ের পদ্ধতি ( Processes of determining the value of resistors): ইলেকট্রনিক সার্কিটে ইলেকট্রনের প্রবাহকে বাধা দেয়ার কাজে যে যন্ত্রাংশ বা কম্পোনেন্ট ব্যবহার করা হয়, তাকেই রেজিস্টর বলা হয়।ইলেকট্রনিক সার্কিটে বিভিন্ন ধরনের রেজিস্টর ব্যবহার হয়, যেমন_ কার্বন কম্পোজিশন রেজিস্টর, মেটাল ফিল্ম রেজিস্টর, কার্বন ফিল্ম রেজিস্টর, ওয়্যার উন্ড রেজিস্টর ইত্যাদি।
রেজিস্টর সমূহের মান নির্ণয়ের জন্য ইলেকট্রনিক (ওহমমিটার) মিটার এবং কারার কোড পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়।যে সমস্ত রেজিস্টরের গায়ে নির্দিষ্ট নিয়মে৷ রং (কালার) লাগানো থাকে, ঐ সমস্ত রেজিস্টর সমূহের মান কালার কোড পদ্ধতিতে নির্ণয় করা যায়। তবে সকল ধরনের রেজিস্টরের মানই মিটার দিয়ে নিরচ্ণয় করা যায়। এখানে কালার কোড ব্যবহার করে রেজিস্টরের মান নির্ণয় কৌশল বিশদভাবে আলোচনা করা হলো।
পুরাতন লিখন পদ্ধতি | বর্তমান লিখন পদ্ধতি |
---|---|
4.7k Ω | 4k7 |
2.2M Ω | 2M2 |
0.8 Ω | 0 R 8 |
10 Ω | 10 Ω |
56k Ω | 56k |
তবে অধিকাংশ রেজিস্টরের মান বোঝানোর জন্য রেজিস্টরের গায়ে বিভিন্ন রঙ্গীন ব্যান্ড থাকে। রেজিস্টরের গায়ে ৩ (তিন) রঙের তিনটি ব্যান্ড, ৪ (চার) রঙের চারটি ব্যান্ড বা ৫ (পাঁচ) রঙের পাঁচটি ব্যান্ড থাকে। এই ব্যান্ড গুলোতে মেটালিক রঙ সহ বিভিন্ন আর্দশ রঙ ব্যবহার হয়। এরুপ রঙের ব্যান্ডের সাহায্যে রেজিস্টরের মান প্রকাশ করার রীতিকে কালার কোডিং বলে।
রেজিস্টরের গায়ে ব্যবহৃত প্রত্যকটি রঙের নির্দিষ্ট কোড বা নম্বর আছে। বিভিন্ন রঙ বিভিন্ন ব্যান্ড অবস্থানের কারণে তাদের কোডের স্বরূপ কেমন হবে তার ও একটি নির্দিষ্ট নিয়ম বা পদ্ধতি আছে। উক্ত নির্দিষ্ট নিয়ম বা পদ্ধতি ব্যবহার করেই রেজিস্টেরের মান নির্ণয় করা হয়।
চার (৪) অথবা পাঁচ (৫) ব্যান্ডের রেজিস্টরের কালার কোড-এর আলোচনাঃ ওয়্যার উন্ড রেজিস্টরের আকার বড় হওয়ার কারণ সাধারণত তার গায়ে ভ্যালু অর্থাৎ মান লেখা থাকে। কিন্তু কার্বন রেজিস্টর অথবা মেটালি ফিল্ম রেজিস্টর বা কার্বন ফিল্ম রেজিস্টর আকারে ছোট হওয়ার তাদের গায়ে তাদের মান লিখে দেয়া সম্ভব হয় না, তাদের মান জানার জন্য রঙের সাহায়্য নিতে হয়। রঙের (colour) সাহায্যে মান নির্ণয় করার এ পদ্ধতিকে বলা হয় ‘কালার কোড পদ্ধতি ‘। এই কালার কোড হচ্ছে আন্তর্জাতিক কালার কোড।কালার কোডে ১০টা পৃথক রঙ ব্যবহার করা হয়। এবং এই ১০ রঙের প্রত্যেকটার জন্য আলাদা আলাদা সংখ্যা বা কোড নিদিষ্ট করা আছে । রেজিস্টরের গায়ে সাধারণত বাদামি বা অন্য কোন একটা হালকা রঙের প্রলেপ দেয়া থাকে।
কালার কোড রেজিস্টর তিন ব্যান্ড, চার ব্যান্ড এবং পাঁচ ব্যান্ড বিশিষ্ট হয়ে থাকে। যদি তিন ব্যান্ডের হয়, তাহলে রেজিস্টরের যেকোন এক ধারে সামান্য একটু দূরে দূরে পর পর দুটি রঙের রিং বা ব্যান্ড দেয়া থাকে। এ দুটি রঙের রিং থেকে একটু বেশ তফাতে অথবা রেজিস্টরের অন্য ধারে সোনালি (Golden) বা রূপালি (Silver) রঙের আর একটি রিং বা ব্যান্ড দেয়া থাকে। এটা হচ্ছে রেজিস্টরের তৃতীয় রঙ এবং এর সাহায্যে সাধারণত রেজিস্টরের টলারেন্স নির্ণয় করা হয়। যদি ৪ (চার) ব্যান্ডের রেজিস্টর হয়, তাহলে রেজিস্টরের যে কোন এক ধারে সামান্য একটু দূরে দূরে পর পর তিনটি রঙের রিং বা ব্যান্ড দেয়া থাকে। এ তিনটি রঙের রিং থেকে একটু দূরে বেশি গ্যাপে বা রেজিস্টরের অন্য ধারে সোনালি বা রূপালি (Silver) রঙের আর একটি রিং বা ব্যান্ড দেয়া থাকে। এটা হচ্ছে রেজিস্টরের ৪র্থ রঙ এবং এই ব্যান্ডে টলারেন্স ব্যান্ড বলে,যা রেজিস্টরের টলারেন্স নির্ধারণ করে। অনেক সময় রেজিস্টরের গায়ে এই চতুর্থ রঙের কোন রিং দেয়া থাকে না। এরূপ ক্ষেত্রে রেজিস্টরের গায়ের প্রলেপের রঙকেই চতুর্থ রঙ হিসেবে ব্যবহার কর হয়। তখন সেক্ষেত্রে ৪র্থ রঙের জন্য বলা হয় “কোন রঙ নেই” বা নো কালার (No Colour)।
আমরা এবার দেখব কালার কোডের সাহায্যে কীভাবে রেজিস্টরের মান নির্ণয় করতে হয়। সাধারণত এ পদ্ধতিতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে রেজিস্টরের মান নির্ণয় করা হয় এ পদ্ধতিতে সব সময় ৪র্থ রঙ অথার্ৎ টলারেন্স রঙের বিপরীত দিক থেকে ব্যান্ড এর গণনা আরম্ভ করতে হয়। সুতারাং ৪র্থ রঙের বিপরীত দিকে একেবারে প্রান্তের প্রথম রঙটা হচ্ছে ব্যান্ড বা রিং, পরেরটা দ্বিতীয় ব্যান্ড এবঙ পরেরটা হচ্ছে তৃতীয় ব্যান্ড বা রিং। এবারে প্রথম ও দ্বিতীয় ব্যান্ডের সংখ্যা দুটি যথাক্রমে পাশাপাশি বসিয়ে সেই সংখ্যা এখানে c হচ্ছে তৃতীয় ব্যান্ডে থাকা রঙের কোড। দুটিকে তৃতীয় ব্যান্ডের জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক সূচক যেমন 10c দ্বারা গুণ করলে যে ফল পাওয়া যাবে, সেটাই হচ্ছে রেজিস্টরের মান। ৪র্থ ব্যান্ডের রঙের জন্য নিদিষ্ট সংখ্যা থেকে জানা যায় রেজিস্টরের টলারেন্স। টলারেন্স হিসাব করা হয় শতকরায়।
রঙ বা কালার | প্রথম ব্যান্ড বা রিং (প্রথম সংখ্যা) | দ্বিতীয় ব্যান্ড বা রিং (দ্বিতীয় সংখ্যা) | তৃতীয় ব্যান্ড বা রিং (গুণক রাশি) (Multiplier) | ৪র্থ ব্যান্ড বা রিং টলারেন্স | |
---|---|---|---|---|---|
কালো (Black) | 0 | 0 | *10 ^0 =1 | +- 20% | |
বাদামি (Brown) | 1 | 1 | *10^1 = 10 | +-1% | |
লাল (Red) | 2 | 2 | *10^2 = 100 | +-2% | |
কমলা ( Orange) | 3 | 3 | *10^3 = 1000 | +-3% | |
হলুদ (Yellow) | 4 | 4 | *10^4 = 10000 | ||
সবুজ (Green) | 5 | 5 | *10^5 = 100000 | +-5% | |
নীল (Blue) | 6 | 6 | *10^6 = 1000000 | +-6% | |
বেগুনি (Violet) | 7 | 7 | *10^7 = 10000000 | +- 12.5% | |
ধূসর (Grey) | 8 | 8 | *10^8 = 100000000 | +- 30% | |
সাসা (White) | 9 | 9 | *10^9 = 1000000000 | +- 10% | |
সোনালী (Golden) | - | - | *0.1 | +-5% | |
রুপালি (Silver) | - | - | *0.01 | +-10% | |
কোন রঙ নেই (No colour) | - | - | - | +-20% |
কালার কোড ব্যবহৃত রঙগুলোর নাম ও তাদের কোড নম্বর ধারাবাহিক ভাবে মনে রাখার উপায় আলোচনা:
B. B. ROY Good Boy and Very Good Worker. এ বাক্যটির মাধ্যমে কালার কোড ব্যবহৃত ১০টি কালারের নাম সহজে স্মরণ রাখা যায় এবঙ তাদের কোড নম্বর ধারাবাহিক ভাবে নির্ণয় করা যায়। এখানে প্রত্যেক শব্দের ক্যাপিটাল ( বড় অক্ষর) অক্ষরটি ব্যবহার করে বিভিন্ন রঙের নাম গুলো তৈরি হয়।
B - Black (কালো)
B - Brown (বাদামি)
R - Red (লাল)
O - Orange (কমলা)
Y - Yellow (হলুদ)
G - Green (সবুজ)
B - Blue ( নীল)
V - Violet (বেগুনি)
G - Grey (ধূসর)
W - White (সাদা)
ক্যাপাসিটরের মান নির্ণয় পদ্ধতি (Process of determining the value of Capacitors):
কোন ধাতব বা পরিবাহী পদার্থের দুটি পাতকে ( Plate) সমান্তরাল ভাবে স্থাপন করে তাদের মাঝখানে একটি ইনসুলেটর বা অপরিবাহী পদার্থ রেখে দুটিকে পৃথক করে যে ডিভাইস তৈরি করা হয়, তাকে ক্যাপাসিটর বলে।
অন্য ভাবে, যে ডিভাইস বা কম্পোনেন্ট নির্দিষ্ট পরিমাণ ক্যাপাসিট্যান্স প্রদান করে, তাকে ক্যাপাসিটর বলে।
ক্যাপাসিটর ইলেকট্রিসিটি সঞ্চয় করে অথার্ৎ ধরে রাখে। ক্যাপাসিটর ইলেট্রিসিটি ধরে রাখার বা ধারণ করার ক্ষমতাকে বলা হয় ক্যাপাসিট্যান্স। ক্যাপাসিট্যান্স এর একক ফ্যারাড বা মাইক্রোফ্যারাড।
ক্যাপাসিটরের কালার কোড এর আলোচনা : মাইকা বা টিউবুলার সিরামিক ক্যাপাসিটর সমূহের ক্যাপাসিট্যান্স মান নির্দেশ করতে তাদের গায়ে কালার কোড ব্যবহার হয়। সুতারাং বলা যায় যে, খুব কম মানের ( সব সময় পিকোফ্যারাড) ক্যাপাসিটন্স ভ্যালুর ক্ষেত্রে এইকালার কোড ব্যবহৃত হয়। রেজিস্টরের মতো কালো (0) থেকে সাদা (9) পর্যন্ত এ ১০টি কালারই ক্যাপাসিটরের ব্যবহৃত হয়। মাইকা ক্যাপাসিটর সাধারণত ছয় - ডট (six - dot) সিস্টেম ব্যবহৃত হয়। যা চিত্রে দেখানো হয়েছে।
ডট পড়ার নিয়ম হচ্ছে উপরের সারিতে বামদিক থেকে ডানদিকে এবং নিচের সারিতে তার বিপরীত দিকে। চিত্র দেখা যাচ্ছে প্রথম ডট সাদা ; এই প্রথম ডট ক্যাপাসিটরের ধরন নিদের্শ করে। মূলত ক্যাপাসিট্যান্স মানের জন্য পড়তে হয় ২য় ডট থেকে পর পর তিনটি ডট, অর্থাৎ ২য়, ৩য় এবং ৪র্থ ডট। ৫ম ডট টলারেন্স এবং ৬ষ্ট ডট EIA শ্রেণি নির্দেশ করে।
বাম পক্ষের প্রশস্ত (Wide) ব্যান্ডটি টেম্পারেচার কো ইফিসিয়েন্ট নির্দেশ করে পর তিনটি ব্যান্ড থেকে ক্যাপাসিট্যান্স নির্ণয় করা হয়। যেমন একটি ক্যাপাসিটরের ২য়, ৩য়, এবং ৪র্থ ব্যান্ডে বা ডটে যদি যথাক্রমে বাদামী, কালো, এবং বাদামী রঙ থাকে, তাহলে ক্যাপাসিট্যান্স হবে 100 pF. সর্ব ডানের ব্যান্ড বা ডটটি টলারেন্স নিদেশ করে।
রঙ (Colour) | ১ম রঙ বা ১ম সংখ্যা A | ২য় রঙ বা ২য় সংখ্যা B | ৩য় রঙ বা ৩য় সংখ্যা (pF) C |
৪র্থ রঙ বা টলারেন্স |
৫ম রঙ |
||
---|---|---|---|---|---|---|---|
ভ্যালু 1০ pf এর চেয়ে বেশি হলে | ভ্যালু 10 pf এর চেয়ে কম হলে | ভোল্টেজ (D.C) F | টেম্পারেচার কোইফিসিয়েন্ট F | ||||
কালো (Black) | 0 | 0 | 1 | +-20% | --- | --- | 0*10^-6 |
বাদামি (Brown) | 1 | 1 | --- | +-1% | --- | 100 | ---- |
লাল (Redl | 2 | 2 | --- | +-2% | +-0.25%PF | 250 | 150*10^-6 |
কমলা (Orangel | 3 | 3 | --- | --- | --- | --- | |
হলুদ (Yellow) | 4 | 4 | --- | --- | --- | 400 | --- |
সবুজ ( Green) | 5 | 5 | --- | +-5% | +-0.5PF | --- | --- |
নীল (Blue) | 6 | 6 | --- | --- | --- | 630 | 750*10^-6 |
বেগুনি (Violet) | 7 | 7 | --- | --- | --- | --- | --- |
ধূসর (Grey) | 8 | 8 | 0.01 | --- | --- | --- | --- |
সাদা (White) | 9 | 9 | 0.1 | +-10% | +-1 PF | --- | --- |
Comments
Post a Comment